যখন কেউ দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে সফল হন তখন সেই সফলতার ঘটনা আরো অনেক মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন। সেই রকম একটি অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা আজকে বলবো। একজন ড্রাইভারের ছেলে যিনি আজ UPSC অফিসার হয়ে উঠেছেন, তার ঘটনা বলব। পবন কুমার কুমাওয়াত রাজস্থানের নাগৌর জেলার রামেশ্বর লালের ছেলে। রামেশ্বর লাল পেশায় একজন ট্রাকচালক কিন্তু তার ছেলের শিক্ষা ও চাকরি আজ তার পরিবারকে একটা আলাদা সম্মান এনে দিয়েছে সমাজের চোখে।
রামেশ্বর লাল মাত্র চার হাজার টাকা রোজগার করতেন, সেই বেতনে সংসার চালানো রীতিমতো কষ্টের কাজ, কিন্তু তার মধ্যেও তিনি তার ছেলেকে পড়াশোনার জন্য সবসময় উৎসাহিত করতেন। কষ্টের সংসারে ছেলের পড়াশোনা তে কোনরকম ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে চাননি বাবা আর সেই ছেলেই UPSC পরীক্ষায় পাশ করেন। পরীক্ষায় ৫৫১ তম স্থান লাভ করেন রামেশ্বর।
ছোটবেলা ও বড় বেলা দারিদ্র্যের মধ্যে কাটানো পবন তার পরিবারের সাথে নাগৌর জেলার সোমানা গ্রামে থাকতেন। সেখানে তাদের একটি কুঁড়েঘর ছিল। একসময় পবনের বাবা মাটি দিয়ে বাসন বানাতেন, ২০০৩ এ পবনের পরিবার যখন নাগৌরে আসেন তখন তার বাবা ট্রাক ড্রাইভারের কাজ শুরু করেন। এই সময় তাদের বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা টুকুও ছিল না। পবন মাঝেমধ্যে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ ধার করতেন কখনও আবার লন্ঠনের আলোয় পড়াশোনা করতেন। শত আর্থিক কষ্টের মধ্যেও পবন স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তার বাবা-মা সব সময় পবনের স্বপ্ন দেখাকে সমর্থন করতেন।
২০০৩ এ পবন নাগৌরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৪.৩৩ শতাংশ ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৯.৯২ শতাংশ নাম্বার পেয়ে পাশ করেন। এরপর জয়পুর কলেজ থেকে বিডিএস ডিগ্রী অর্জন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়, আর্থিক সঙ্গতি অনেক বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ালেও তার বাবা তাকে সবসময় উৎসাহিত করে ছিলেন, এমনকি ঋণ নিয়েও পবনের কোচিং ফি মিটিয়ে ছিলেন তিনি। ঋণের টাকা ফেরত দিতে তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল তবুও ছেলের শিক্ষাতে ও প্রস্তুতিতে তিনি কোনো রকম বাধা আসতে দেননি। পবন তার লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন এবং আজ তিনি একজন আইএএস অফিসার যা তার বাবা-মায়ের জন্য গর্বের বিষয়।