একটা সময় ছিল যখন মানুষ ব্যবসা ছেড়ে চাকরির দিকে বেশি করে মন দিতেন। চাকরি করাটা জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল তবে বর্তমানে মানুষের ধ্যান-ধারণা বদলাচ্ছে। এখন মানুষ বুঝতে পারছেন চাকরিটা জীবনের একমাত্র ভরসাস্থল না, যদি জমিয়ে ব্যবসা করা যায় তাহলে চাকরির থেকে অনেকগুণ বেশি পরিমাণে লাভবান হওয়া যেতে পারে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে অনেক মানুষ চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করছে আর সেই ব্যবসা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে এবং অন্যান্য মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা জায়গা হয়ে উঠছে।
এছাড়া ইউটিউবার ব্লগারের মত পেশাগুলো এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে চাকরি ছেড়ে মানুষ এই সমস্ত পেশার দিকে ঝুঁকছেন। কেউ কেউ আবার চাকরি ছেড়ে চাষের দিকে মন দিচ্ছেন। কিছুদিন আগেই একজন এর জীবনী পড়েছিলাম যিনি চাকরি ছেড়ে ফুলের চাষে মন দিয়েছিলেন এবং ফুলের চাষ করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করে চলেছেন, আজ এমন একজনের কথা বলবো যিনি আমের চাষ করে বছরে ৫০ লক্ষ টাকা আয় করেন এখন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এটি যে চাকরি ছেড়ে তিনি এই চাষবাসের দিকে মন দিয়েছেন।
ভদ্রলোকের নাম কাকাসাহেব সাওয়ান্ত ৪৩ বছর বয়সে তিনি চাকরি ছেড়ে যখন জমিতে আম গাছ বসাতে শুরু করেন তখন অনেকেই বিষয়টি দেখে হাসাহাসি শুরু করেছিল। তার কান্ড কারখানা মানুষের কাছে আজব হাস্যকর মনে হতো, তবে তিনি কিন্তু মানুষের হাসি দেখে থেমে যাননি। তার নিজের উপর ভরসা ছিল আর সেই জায়গা থেকেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বর্তমানে তিনি নিজেকে এমন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে তার আন্ডারে কাজ করছেন ২৫ জন মানুষ!
আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে ২৮ বছর বয়সে ৮০০ কোটির কোম্পানি তৈরি করলেন স্ন্যাপডিলের প্রতিষ্ঠাতা কুনাল
কাকাসাহেব সাওয়ান্ত ও তার দুই ভাই মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে প্রায় কুড়ি একর জমি কেনেন, তবে সেই এলাকাটি খরাপ্রবণ হওয়ার কারণে সেখানকার এলাকার মানুষ আঙুর বা ডালিম চাষ করেন কিন্তু কাকাসাহেব সাওয়ান্ত ২০১০ সালে একটি আম বাগান তৈরি করেন। এরই মধ্যে সরকারের সাহায্যে অনেকগুলি পুকুর খনন করা হলে ঐ এলাকার জলের সমস্যা বেশ কিছুটা লাঘব হয়, ফলে চাষবাসের সুবিধা আরো বেশি পরিমাণে হয়ে যায়। এই অবস্থায় কাকাসাহেব সাওয়ান্ত তার জমিকে দুটি ভাগে ভাগ করে তিনি একভাগে আমগাছ করেন ও অন্য ভাগে সবজি চাষ করেন।
এরপরে তিনি ১০ একর জমিতে আম গাছ ও অন্য ১০ একর জমিতে ডালিম পেয়ারার মতো গাছ লাগাতে থাকেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এখন প্রতি বছর ২০ টন আম উৎপাদিত হয়। বর্তমানে তার বাগানে ২২ প্রজাতির আম গাছ দেখা যায়। এছাড়া আয় করবার জন্য তিনি দু’রকমের পথ বেছে নিয়েছেন আম বিক্রি করার পাশাপাশি কাকা সাহেব সাওয়ান্ত প্রতি বছর প্রায় ২ লক্ষ আম গাছের চারাও বিক্রি করেন- এর থেকেও তার মোটা টাকা ইনকাম হয়। এখন তিনি সকলের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। শুধু তাই নয় আজ তার থেকে বহু মানুষের কর্মসংস্থান ও বহু পরিবারের অন্নসংস্থান হয়। তিনি তার নার্সারিতে ২৫ জনকে চাকরি দিয়েছেন।