কিছু কিছু মানুষ অনুপ্রেরণার অপর নাম হন, ঠিক যেমন লক্ষ্মী নিবাস মিত্তল। যিনি মাত্র ২৬ বছর বয়সে ব্যবসা শুরু করেছিলেন, আজ তার স্টিলের ব্যবসা বিশ্বখ্যাত তাই বর্তমানে তিনি গোটা বিশ্বে স্টিল কিং নামে পরিচিত, এছাড়া তিনি আর্সেলর মিত্তলের চেয়ারপারসন এবং সিইও। বর্তমানে ১৫০০ কোটি টাকার মালিক লক্ষী নিবাস মিত্তল একজন প্রথম ভারতীয় নাগরিক যিনি বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকার শীর্ষ ১০ এর মধ্যে স্থান পেয়েছেন।
বর্তমানে ইংল্যান্ডে অবস্থিত একজন ভারতীয় ইস্পাত ম্যাগনেট হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মী নিবাস মিত্তলের জন্ম হয়েছিল ১৯৫০ এর ২ রা সেপ্টেম্বর। রাজস্থানের চুরু জেলার রাজগড় তহসিলের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোট থেকেই তার পরিবারের সাথে তিনি কলকাতায় থাকতেন। এখানেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। ১৯৫৭-১৯৬৪ সাল পর্যন্ত শ্রী দৌলতরাম নোপানি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেন, পরবর্তীতে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ব্যবসা ও একাউন্টিং নিয়ে স্নাতক পাশ করেন। এরপর তার মধ্যে নতুন কিছু করার একটি ইচ্ছা জন্মায়।
ব্যবসায়িক পরিবারের ছেলে ছিলেন তিনি, পারিবারিক ব্যবসা দেখেই বড় হয়ে উঠেছিলেন, তাই অল্প বয়সে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ইন্দোনেশিয়ার সিডোরজোতে প্রথম ইস্পাত কারখানা পিটি ইস্পাত খোলেন তিনি। ১৯৭৬ সালে এই কারখানা খুলেছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে তার ব্যবসার সাফল্য তাকে এমন জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলো যে, তখন তিনি ইউরোপের সবচেয়ে ধনী এশিয়ান হয়ে ওঠেন।
২০০৬ তে লক্ষী নিবাস মিত্তল আর্সেলের ইস্পাত কোম্পানিটি কেনার চেষ্টা করতে থাকেন তবে বহু চেষ্টা করলেও তিনি সেই সময় সফল হন না। সেই সময় আর্সেলের ইস্পাত কোম্পানির সিইও গাই গুলিও প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীতে ৩৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে তিনি আর্সেলের ইস্পাত কোম্পানিটি কিনতে পারেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লক্ষী নিবাস মিত্তলের বাবার নাম ছিল মোহনলাল মিত্তল। তার ছোট দুই ভাইয়ের নাম বিনোদ ও প্রমোদ। নিপপনডেন ইস্পাত নামের পারিবারিক ব্যবসা দেখেই লক্ষীর বড় হয়ে ওঠা এবং ব্যবসায়িক বুদ্ধির জন্ম হয়। বর্তমানে আর্সেলর মিত্তল বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত তৈরীর সংস্থা রূপে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের মোট ৬০টি দেশে এই সংস্থার কারখানা রয়েছে। এই সংস্থার ফলে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। একজন মানুষের সাহসী পদক্ষেপ বহু মানুষকে চাকরি দিয়েছে, আর্থিকভাবে করে তুলেছে সক্ষম।