আই টি কোম্পানিতে কাজ করা বহু মানুষের স্বপ্ন। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ থাকে এই কাজকেই হেলায় ছেড়ে দিতে পারেন নিজেদের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে। ঠিক যেমন করেছেন জয়ন্তী। মহারাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ঐতিহ্যবাহী করে তুলবার জন্য তিনি ইনফোসিসের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। জয়ন্তী ইনফোসিসেরর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, এছাড়া তিনি প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন।
আই টি কোম্পানিতে কাজ করতেন তিনি, সেই জন্য বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন, বিদেশে গিয়ে তার নিজের দেশের খাবারের অভাব বোধ করতেন তিনি সেই থেকেই তার এই সিদ্ধান্ত। জয়ন্তী বলেন,“বিদেশে গিয়ে সবচেয়ে বেশি যদি কোন জিনিসের অভাব বোধ করতাম তা হলো নিজের রাজ্যের খাবার।” এছাড়া বিয়ের পরে স্বামীর সাথে প্যারিসে গিয়েছিলেন তিনি, তার স্বামী নিরামিষাশী হওয়ায় প্যারিসে খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা হতো তাদের, সেখানে গিয়ে নিজের দেশের খাবার পাওয়াটা স্বপ্নের মতো মনে হতো!
তার স্বামী তাকে জানিয়েছিলেন একটি চিঠিতে, তিনি তাকে বড্ড বেশি মিস করেন, তার সাথে মিস করেন তার হাতের বানানো দেশের খাবার। এরপরই জয়ন্তী নিজে কিছু করবার সিদ্ধান্ত নেন। জয়ন্তী এরপর বলেন, একবার তারা স্বামী-স্ত্রী ফ্লাইট করে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন, সেখানে পথে কোনো রকমের নিরামিষ খাবার ছিল না, তার স্বামী নিরামিষভোজী হওয়ায় তাদের জন্য সেই জার্নিটা অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। এরপরই তিনি তার দীর্ঘদিনের ভাবনাকে কার্যে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নেন।
নিরামিষ খাবারের উপর কাজ করবার ভাবনাকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় নিজের কাজে ইস্তফা দেন। এরপর তিনি নিজের একটি রেস্টুরেন্ট খোলেন পূর্ণব্রহ্ম নামে। এই রেষ্টুরেন্টে মহারাষ্ট্রের সব রকমের ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ খাবার পাওয়া যায়। এখানে শ্রীখন্ড পুরি থেকে শুরু করে পুরান পুলি ও সমস্ত রকমের বনেয়াদি মারাঠি খাবার পরিবেশন করা হয়।
আজ তার আউটলেটে মুম্বাই, পুনে, অমরাবতী থেকে শুরু করে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনও।
তবে প্রথম দিকে এই কাজটি এতটা সহজ ছিল না, প্রথমে তিনি নিজে মোদক বানিয়ে কাজটি শুরু করেন, প্রথম দিকে একটু আর্থিক সমস্যাও ছিল তবে নিজের দৃঢ় সংকল্প থেকে সরে আসেননি তিনি, নিজের ভাবনাকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করে গিয়েছেন, হাল ছেড়ে দেননি কোনোমতেই আর আজ তিনি সফল। আজ তার হোম শেফ মোদকেরও ৪৮ টি কেন্দ্র রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এখানে সবথেকে আকর্ষনীয় ব্যাপার হলো এখানে প্রতিটি কর্মচারীকে একই বেতন দেওয়া হয়। এছাড়া এখানে সকল খাবারের উপর ৫% ছাড় দেওয়া হয় তবে খাবার নষ্ট করলে ২ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জ বসানো হয়। সেই কারণে এখানে কোন মানুষ খাবার নষ্ট করেন না।